.

প্রিয় কবি

অঞ্জন সরকার জিমি অমিত চক্রবর্তী অমিতাভ দাশ গুপ্ত অশোক দেব আন্দালীব আবিদ আজাদ আবুল হাসান আল মাহমুদ আলতাফ হোসেন আহসান হাবীব খোন্দকার আশরাফ হোসেন জয় গোস্বামী জীবনানন্দ দাশ টোকন ঠাকুর তানিম কবির দীপন চক্রবর্তী নবনীতা দেবসেন নির্মলেন্দু গুন নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী পূর্ণেন্দু পত্রী ফয়সল রাব্বি ফারাহ সাঈদ বিনয় মজুমদার বুদ্ধদেব বসু ব্রাত্য রাইসু ভাস্কর চক্রবর্তী মজনু শাহ মন্দাক্রান্তা সেন মহাদেব সাহা মাসুদ খান মুহাম্মদ মরিয়ম মৌ ভট্টাচার্য রণজিৎ দাশ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রিফাত হাসান রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ শক্তি চট্টোপাধ্যায় শঙ্খ ঘোষ শহীদ কাদরী শোয়েব শাদাব শ্বেতা চক্রবর্তী সমর সেন সমুদ্র গুপ্ত সরকার আমিন সাইয়েদ জামিল সিকদার আমিনুল হক সুকান্ত ভট্টাচার্য সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সুনীল সাইফুল্লাহ সুবোধ সরকার সুমন রহমান হুমায়ুন আজাদ হুমায়ূন আহমেদ হেলাল হাফিজ

মেয়েদের ন এবং ণ

মেয়েদের ন এবং ণ  
- সুবোধ সরকার
বইঃ দ্বৈপায়ন হ্রদের ধারে (২০১০)

ভদ্র, শিক্ষিত মেয়েদের পুরুষরা খুব একটা পছন্দ করে না।
সিগারেট খাবে,বার বার আঁচল খসে পড়বে
সেইসব মেয়েদের দাম বেশি।
সারা জীবন কেউ তো  কামু কাফকা শ্রীকৃষ্ণকীর্তন পড়ে না
মাঝে মাঝে কোকশাস্ত্র পড়তে হয়
এক বৈশাখে ডাঁটার চচ্চড়ি আর বিউলির ডাল খুব ভাল লাগে
কিন্তু সেটা ফাগুন মাসে আর কত খেতে পারি?
কচি পাঁঠা আর বৃদ্ধ মেষ কি পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে?

আমার ভুল হয়েছিল কোথায় সেটা বলি
বনবিহারী নাগ এবং বিন্দুবালা মুখার্জির মাঝখানে
যেটুকু গোধূলি অবশিষ্ট ছিল
তার উপদ্রুত উপনিবেশ থেকে হাতে ভদ্কার  গ্লাস নিতে নিতে
একুশ বছর বয়সের মেয়েটি আমাকে একদিন চোখ মারল।

আমার ভুল হয়েছিল কোথায় সেটা বলি
আমি বাথরুমে ঢুকে চোখেমুখে জল দিলাম
মাথায় চাঁটি মেরে আয়নাকে জিজ্ঞাসা করলাম ঠিক দেখেছি?
মানুষ যে হাতে ভাত খায় সেই হাতেই যেহেতু মৈথুন করে
আমি বুঝতে পারছিলাম না কী করব হত দিয়ে
একটা বড় পেগ গলায় ঢেলে মেয়েটিকে বললাম
আপনার মোবাইল নম্বরটা পেতে পারি?
আমি টেবিলে কাগজ রেখে লিখছিলাম,মেয়েটি বললঃ 
উঠুন কাগজটি আমার পিঠে রেখে লিখুন।

আমার ভুল হয়েছিল কোথায় সেটা বলি
আমি সারদা মাকে বলেছিলাম আমার দিকে তাকিয়ো না, মা
আমি তোমার দুষ্টু ছেলে ছিলাম না, হয়ে গেলাম
আমি মদ খেতাম না, খেতে শুরু করেছি
আমি বর্ষার রাতে বিভূতিভূষণ, ব্যাঙ আর ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শুনে কাটাতাম

এখন সারারাত মাস্টার করেছি আর রামকৃষ্ণ পড়েছি। 

স্পাইনাল রড দিয়ে প্রেম নেমে আসছে হু হু করে
বাঁশ ধরে যেমন নেমে আসে বাঁদর।
পেটের ভেতরে একটা চামচ ঘুরে বেড়াচ্ছে, কিছুতেই যাচ্ছে না
ভারত থেকে যেমন কিছতেই উপনিবেশ যেতে চাইছে না।

আমার ভুল হয়েছিল কোথায় সেটা বলি
আমি মেয়েটাকে বললাম তোমার চোখদুটো খুব সুন্দর, কুয়াশাময়
কিন্তু তুমি হংকং যেতে চাইছ কেন?
আমার বয়স হয়েছে,মধূপূড় চলো
মেয়েটি সেগারেট ধরিয়ে যতটা সম্ভব ঝুঁকে জুজু দেখিয়ে
আমার মুখে ধোঁয়া ছেড়ে বলল : তুমি হরলিক্স খাও। 
আমাকে এত অপমান? জিন্দেগিতে কেউ আমাকে হরলিক্স খেতে বলেনি
আমি মেফিস্টফিলিসকে মেনে নিতে পারি,
হিটলারকেও সহ্য করেছি
কিন্তু মেয়েদের লঙ্কা সহ্য করতে পারছি না।
ন আর ণ মুচকি হাসে,পৃথিবীটা সরষের তেল না হুইস্কি বুঝতে পারিনা।

আমার ভুল হয়েছিল কোথায় সেটা বলি
মেয়েটি মোটেও আমাকে চোখ মারেনি, সে চোখ মেরেছিল আমার নিয়তিকে।

সে দেখতে চেয়েছিল আমার নিয়তি ঘুমিয়ে পড়েছে, না
কালবাউসের মতো এখনও লাফায়।
নিয়তি, নেমেসিস আর লিবিডো- এরা তিন বোন
ঝড় হোক, বৃষ্টি হোক, মহামারি হোক, মানুষ মৈথুন করবেই।

আর বলিহারি দিই ওদের তিন বোনকে
হাতে ভদ্কার গ্লাস তুলে নিতে নিতে, অবশিষ্ট গোধূলি থেকে 
ওরা তিন বোন তিন উপনিবেশ থেকে তিনজন পুরুষকে চোখ মারবেই।
এরপর পৃথিবীর মান চিত্রের ওপর দাঁড়িয়ে
কয়েকজোড়া পা ঠিক করবেঃ 

পৃথিবীটা সরষের তেল নাকি হুইস্কি?
                     #